মাফিয়ার শহরে । পাঠঃ৩

 


মাফিয়ার শহরে

#পাঠঃ৩

#লেখকঃ নীল মেহেরাজ

  

[আগের পাঠ গুলো আমার টাইম লাইনে দেওয়া আছে। চাইলে পড়ে আসতে পাড়েন।]

   

ব্যচেল্যার জীবনের আমার মতে সঙ্গি হয় মাএ দুইটা জিনিস। একটা হলো সিগারেট আর অপর টা হলো গিটার। এই দুইটার মধ্যে যাদের যেটা ভালো লাগে সে সেইটাই সঙ্গি করে নেয়।কেউ কেউ দুটোকেই সঙ্গি করে নেয়

সকালে অাযানের শব্দে ঘুম থেকে জেগে উঠলাম।

তারপর নামায পড়ে এসে এক কাপ কফি নিয়ে ছাদে গেলাম। এত সকালে চাদনি ছাদে আসবে বলে মনে হয় না। 

এই শীতে সকাল বেলা কুয়াশার মাঝে এক কাপ কফিই যথেষ্ট শরীর টা গরম রাখতে। 

কফিটা শেষ করে নিজের রুমে আসলাম। তারপর রেডি হয়ে চলে আসলাম কেন্টিন এ।

  

পুরোনো বটগাছের নিচে বসে আছি এমন সময় রাকিব, জয় চলে আসলো,,,,,,,

রাকিবঃকিরে কি খবর।

আমিঃ এইতো ভালো। 

জয়ঃ আজকেও এত সকালে এসেছিস।মনে হয় বাসায় খেয়ে আসিস নি।

আমিঃ আরে সালা আমি কি মেসে থাকি নাকি যে বাসায় থেকে খেয়ে আসবো।

মুনিয়াঃ তোকে যে বলেছিলাম আমাদের বাসায় থেকে খেয়ে আসিস প্রতিদিন। (মুনিয়াও আমার ফ্রেন্ড) 

আমিঃ এসব কথা বাদ দে।

ক্লাস করে বাসায় চলে আসলাম

প্রতিদিন চাদনির বকা, খুব সকালে ছাদে গিয়ে কফি খাওয়া, ভার্সিটিতে গিয়ে ক্লাস করা এসব নিয়ে ভালো ভাবেই দিন গুলো কাটছে।

   

রাতের বেলায় মহুয়া আন্টির বাসায় ডাক পরলো,,,,,,,,

আমিঃ আসসালামু আলাইকুম আন্টি।

আন্টিঃঅলাইকুম আসসালাম।কেমন আছিস বাবা।

আমিঃ হুমম ভালো আছি।আপনি কেমন আছেন।

আন্টিঃহুমমম ভালো আছি।

আমিঃ আমাকে ডেকেছিলেন।

আন্টিঃহুমমম বাবা ডেকেছিলাম। 

আমিঃ কি জন্য ডাকছিলেন আন্টি। 

আন্টিঃ আসলে হয়েছে কি বাবা আগামি কাল থেকে তুই চাদনিকে সাথে করে নিয়ে ভার্সিটি তে যাস কেমন।

আমিঃ সে নাহয় যাব। কিন্তু আপনার মেয়ে কি যাবে।

আন্টিঃহুমমম যাবে।

আমিঃ আচ্ছা নিয়ে যাব।

আন্টি দের ফ্লাট থেকে আমার নিজের রুমে আসতেই হাতে থাকা ফোনটা বেজে উঠল। 

স্কিনের দিকে তাকাতেই দেখি ছোট বোন জান্নাত ফোন দিয়েছে। 

ফোনটা রিসিভ করেতেই,,,,,,

জান্নাতঃ ভাইয়া তুই তাড়াতারি বাড়িতে চলে আয়।

(কান্না করতে করতে বলছে)

আমিঃ কিরে তুই কান্না করছিস কেন। কিছু কি হয়েছে।

জান্নাতঃ তুই তারাতারি আয়।

(কান্নার মাএা বেড়ে বলল)

আমিঃ আচ্ছা আসছি।কিন্তু কি হয়েছে সেটা বল।

জান্নাতঃ আয় তাড়াতাড়ি। 

বলেই জান্নাত ফোনটা রেখে দিলো।

  

আমি পড়ে গেলাম চিন্তায়।

তারপর আমি মায়ের কাছে ফোন দিলাম। কিন্তু নাম্বার বন্ধ বলছে। 

আমি আর দেড়ি না করে নিজের বাড়ি বগুড়ার উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়লাম। কাউকে কিছু না জানিয়েই বেরিয়ে পরলাম।

জানিনা মায়ের ফোন কেন বন্ধ। আর রিয়াও তো কিছুই বললো না।হয়ত বাসায় কোনো কিছু হয়েছে।

  

সকাল ৭ টা বাসায় এসে পৌঁছে গেলাম। রাত ১১ টায় গাড়িতে উঠেছিলাম। কথায় আছে না বিপদে পরলে চামচিকেও লাত্থি মারে। আজকে বুঝলাম কথাটা কতটা সত্যি। 

আমার গাড়ি থেকে নামার কথা ছিলো ৪ টার সময়। কিন্তু গাড়ি নষ্ট হওয়াতে এত দেড়ি হলো। 

বাসার সামনে আসতেই বড় সর একটা ঝটকা খেলাম। কারন বাসার সামনে অনেক মানুষ। বুঝলাম না এত সকালে এত মানুষ কেন বাসার সামনে।

গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকতেই আমার ছোট চাচা এসে কাধে হাত রাখলো। তারপর আমার ব্যাগটা নিয়ে আমাকে বাসার ভিতরে নিয়ে আসছে। 

  

মেঝে দুটি দেহ পড়ে আছে। বুঝতে পারছি মারা 

লোক দুটি মারা গেছে। কিন্তু এরা কারা এটাই বুঝতে পারছি না। 

হঠাৎ মনে হল জান্নাত এর কথা। পাশে চাচাকে বললাম,,,,,,,

আমিঃ চাচা জান্নাত কোথায় 

চাচাঃ জান্নাত ঘুমিয়ে আছে বাবা।

আমিঃ ওহহহ। তা এগুলো কারা(লাশ দুটো দেখিয়ে)

চাচাঃ তুই ভেঙ্গে পড়িস না। (বলছে আর কান্না করছে)

আমিঃ আরে চাচা এসে থেকে দেখছি তুমি,চাচি সহ সবাই কান্না করছো। মানে কি এগুলার।

চাচাঃ(চুপ করে আছে)

আমিঃ কি হলো চুপ করে আছো কেন। আর বাবা মা কই।

চাচাঃ এই যে বাবা তোর মা আর বাবা শুয়ে আছে (লাশ দুটোকে দেখিয়ে বলল)

আমি আবাক হয়ে লাশ দুটির দিকে তাকালাম। মুখ দিয়ে আর কোনো কথা বলতে পাচ্ছি না।মাথাটা কেমন যেন ঘুর ঘুর করতে শুরু করলো।

চোখ দিয়ে অঝর ধারায় জল পরতে লাগলো।

মুখ দিয়ে একটুকুও শব্দ হচ্ছে না।

বসে পরলাম বাবা,মায়ের পায়ের কাছে।

  

দুপুর ২ টার দিকে বাবা মাকে কবর দিয়ে বাসায় চলে আসলাম।

বাবা মাকে গলা কেটে মেরে ফেলা হয়েছে। যা কাফনের কাপরের দিকে তাকাতেই বুঝতে পেরেছি।কারন দুই জনেরই গলার কাছে সাদা কাপড় লাল হয়ে গেছে।রক্ত গোসল করানোর পরেও রক্ত পড়েরে।

একে একে এলাকার সবাই,আত্নীয়রা চলে গেলো।

  

সন্ধার সময় আমি আর জান্নাত বাবা মায়ের কবরের পার্শে এসে বসে পড়লাম। 

মাথায় এখন banner push topper একটাই চিন্তা কে বা কারা বাবা,মা কে মারলো। জানি এখন এসব চিন্তা করার সময় নয়।কিন্তু তবুও এসব চিন্তা মাথায় আসতেছে।


১ সপ্তাহ পর এখন কিছুটা সাভাবিক হয়েছি। 

আমি জান্নাতকে ডেকে বললাম,,,,,,

আমিঃ আচ্ছা তুই সেই দিন কই ছিলি।

জান্নাতঃ ভাইয়া আমি চাচি,আর রিয়া বাহিরে গেছিলাম। (রিয়া আমার চাচাতো বোন)

আমিঃ আর চাচা,বাবা মা কোথাই ছিলো।

জান্নাতঃ মা,বাবা বাসাই ছিলো।

আমিঃ চাচা কই ছিলো।

জান্নাতঃ আমি জানতাম না চাচা কই ছিলো।

আমিঃ আচ্ছা এসব বাদ দে।

জান্নাতঃ ভাইয়া আমার না এই শহরে থাকতে ভয় করে রে।

আমিঃ কেন ভয় করে।

জান্নাতঃ ভাইয়া তুই তো বাহিরে থাকিস। তুই জানিস না এই শহরের লোকজন কতটা খারাপ।

আমিঃ কেন রে কি হয় এই শহরে। 

জান্নাতঃ ভাইয়া এটা আমাদের মতো সাধারন মানুষেরদের বেচে থাকার শহর নয় রে। এটা হলো মাফিয়ার শহর। এখানে শুধু মাফিয়া রাই থাকে।

তুই তো জানিস যে বাবা এই মাফিয়াদের শেষ করার জন্য নিজেরই অনেক শত্রু তৈরি করে ছিলো।

আমিঃ হুমম জানি তো।

জান্নাতঃ জানিই সেদিন সন্ধার সময় বাবা আমাকে ফোন করে বলেছিল,,,

জান্নাত মা তুই তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আয়। আজকে আমি জানতে পেরেছি এই মাফিয়ার শহরে কে বড় মাফিয়া

এরপর আমরা বাসায় চলে এসেই দেখি বাবা,মায়ের গলা কাটা লাশ।

আমিঃ ওহহহ।

জান্নাতঃ আমার কি মনে হয় জানিস।

আমিঃ কিহহ মনে হয় রে।

জান্নাতঃ আমার মনে হয় এই মাফিয়ার শহরের বড় মাফিয়াই বাবা,মাকে মেরেছে। এর কারন হলো বাবা মাফিয়ার আসল পরিচয় জানতে পেরেছে।

আমিঃ হুমমম রে।

জান্নাতঃ ভাইয়া চল আমার দুই ভাইবোন দুরে কোথায় চলে যাই।

আমিঃ(কেমনে যাব রে বোন বাবা মায়ের মৃত্যের প্রতিশোধ না নিয়ে। প্রতিশোধ তো আমি নিবই।মনে মনে বললাম) হুমম যাব রে। মা,বাবার জন্য দোয়া করেই চলে যা মাফিয়ার শহর থেকে।

চলবে,,,,,,,,,,,,,

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

buttons=(Accept !) days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !