মাফিয়ার শহরে । পাঠঃ২

 


#মাফিয়ার শহরে

#পাঠঃ২

#লেখকঃ নীল মেহেরাজ

  

[আগের পাঠ গুলো আমার টাইম লাইনে দেওয়া আছে। চাইলে পড়ে আসতে পাড়েন।]

   

পরের দিন সকাল বেলায় হাতে কফির কাপ নিয়ে চলে গেলাম ছাদে। আবার দোলনায় বসে আছি।

হঠাৎ করেই চাঁদনি চলে আসলো। এসেই বলতে লাগলো,,,,,,,,,,,,

চাদনিঃ একটা মানুষ যে কতটা নিলর্জ হতে 

পারে তা আপনাকে না দেখলে বুঝতেই পারতাম না।

আমিঃ শুভ সকাল (ঠোটের কোন একটা ছোট হাসি দিয়ে বললাম)

চাদনিঃ আপনাকে না বলছি আর ছাদে আসবেন না। তাও কেন নিলর্জ, বেহায়ার মতো চলে আসছেন।

আমিঃ আসলে সকাল বেলা মিষ্টি কুয়াশায় ঘেরা চারপাশটা উপভোগ করার জন্য মুলত ছাদে এসেছি।

চাদনিঃ এই ফকিন্নি শুন এতই যদি তোর কুয়াশায় ঘেরা সকাল দেখার ইচ্ছা হয় তাহলে তো এইরকম (তা নিজেদের বাসাটা দেখিয়ে) একটা বাড়ি বানিয়ে দেখ যা।

আমিঃ আচ্ছা বাই চলে যাচ্ছি। 

 

বলেই নিচে আমার ফ্লাটে চলে আসলাম। বুঝতে পারছি না। কেন যে এই মেয়েটা আমার সাথে এমন বাজে ব্যবহার করছে। 

তারপর চলে আসলাম আমার ভার্সিটিতে। সকাল বেলা কিছু খেয়ে আসিনি তাই সোজা ক্যান্টিনে চলে গেলাম। 

খেয়ে বের হতেই দেখি জয় আর রাকিব এসে গেছে। জয় আর রাকিব আমার সাথেই পড়ে।

তারা আমার কাছে এসেই বলতে লাগলো,,,,,,,,,

জয়ঃকিরে তোর তো আর দেখাই পাওয়া যায় না।

আমিঃ আরে শালা কি যে বলিস না।

রাকিবঃতা কি খবর তোর।

আমিঃহুমমম ভালোই তো।তোদের কি খবর।

রাকিবঃহুমমম আলহামদুলিল্লাহ। 

আমরা কথা বলছি এমন সময় দেখি ভার্সিটির গেট দিয়ে চাদনি ভিতরে ঢুকলো।

মানে কি সে এখানে কেন। আরে মনে হয় নিউ এডমিশন নিবে।

 । 

বিকেলে ছাদে এলাম। এবার আর দোলনার দিকে গেলাম না। ছাদটা একটু বড় হওয়ায় আমি দোনলা থেকে একটু দুরে এক কর্নারে গিয়ে বসলাম।

কেমন জানি আজকে মনটা ভালো নেই। বার বার শুধু বাবা মায়ের কথাটায় মনে পড়ছে। মা যতই বলুক যে তারা ভালো আছে।কিন্তু আসলে তারা বিন্দু পরিমাণ ভালো নেই এটা আমি ভালো করেই জানি। 

আচ্ছা আপনারাই বলুন এই যুগে কেউ কি কারো ভালো চায়। আমার বাবা একজন এমপি তার শত্রুদের নাই অভাব। সব সময় তার মৃত্যুর ঝুকি থাকে। বাবার এত শত্রু থাকলেও আমি তাদের কাউকে চিনি না। আর বাবাও এসব বিষয় নিয়ে আমাকে কখনো কিছু বলে নি।আমার এসব বিষয় ভালো লাগেনি বলে নিজ শহরে ছেড়ে এই শহরে এসেছি। 

বসে বসে এসব ভাবছি এমন সময় ছোট বোনের নাম্বার থেকে ফোন আসলো,,,,,,,,,,,

আমিঃ হুমম কেমন আছিস।

জান্নাতঃহুমমম ভালো আছি। 

আমিঃ বাবা মা কেমন আছে।

জান্নাতঃসবাই ভালো আছে। কি করছিস এখন।

আমিঃ এইতো রুমে বসে আছি।তুই কি করিস।

জান্নাতঃ আমিতো বাহিরে ঘুরতে আসছি।

আমিঃ কোথায় আছিস এখন।

জান্নাতঃ বাসার পাশেই এক বান্ধবীর বাড়িতে এসেছি।

আমিঃ ওহহহ। আচ্ছা শোন একটু পরই সন্ধা হবে তাড়াতাড়ি বাসায় চলে যা।

জান্নাতঃআচ্ছা 

  

ফোনটা রেখে দিলাম। এমন সময় মহুয়া আন্টির ডাক পরলো। মানে তাদের কাজের লোক রহিমা খালা ডাকতে এসেছে। আমি চলে গেলাম চার তলায় মহুয়া আন্টি দের ফ্লাটে,,,,,,,,

আমিঃ আন্টি আমাকে ডাকছিলেন।

আন্টিঃ হুমমম এদিকে আয়তো একটু বাবা কাজ আছে।(সোফায় বসে বসে টিভি দেখছে)

আমিঃ হুমমম আন্টি বলেন(সোফায় বসতে বসতে বললাম)

আন্টিঃ তুইতো প্রাইম ভার্সিটিতে পড়িস তাই না।

আমিঃ হুমমম আন্টি। কিন্তু কেন বলুন তো।

আন্টিঃ আসলে চাদনিকে সেখানে ভর্তি করিয়েছি তো তাই। 

আমিঃ ওহহহ বুঝেছি। কোনো সমস্যা হলে আমি আছি।আপনি চিন্তা করবেন না। 

আন্টিঃহুমমম। আর তুই কিন্তু ওর ব্যবহারে কষ্ট পাসনা।ও ছোট থেকে এমনই।কিন্তু কয়েকদিন পর দেখবি সে আসলে কেমন। 

আমিঃ সে কেমন আন্টি।

আন্টিঃ সেটা নিজের চোখেই দেখে নিস। এখন এখানে বস আমি আসছি।

আমিঃ কোথায় যাচ্ছেন আবার।

আন্টিঃচুপচাপ বস আমি আসছি।

কথাটা বলেই আন্টি কোথায় যানি চলে গেলো।  

মিনিট ২ এর মধ্যে হাতে একটা বাটি নিয়ে আমার সামনে এসে দাড়ালো।তারপর,,,,, 

আন্টিঃএইযে ধর পায়েস (বাটিটা আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে)

আমিঃ আপনি রান্না করে ছেন। (হাতে নিতে নিতে)

আন্টিঃ খেয়ে নে তারপর বলবো।

আমিঃ ওকে।

বলেই এক চামচ মুখে দিলাম। আজকে পায়েস টা যেন অন্য রকম লাগছে। এর আগেও আন্টির হাতে রান্না করা পায়েস আমি খেয়েছি। কিন্তু এমন ছিলো না। আজকের টা কেমন যেন একটু বেশিই ভালো লাগছে। তবে মহুয়া আন্টিও সেই লেভেলের পায়েস বানাতে পারেন।

খাওয়া শেষ করে বললাম,,,,,,,

আমিঃ আন্টি আজকের পায়েস টা কেমন অন্য রকম স্বাদ পেলাম। কেমন রান্না করেছিলো।

আন্টিঃ ভালো লেগেছে তো। 

আমিঃ হুমম আন্টি খুব ভালো লেগেছে কে রেধেছে।

আন্টিঃ আজকে পায়েস টা চাদনি রান্না করেছিলো(বাস্তবের চাঁদনি তো মনে হয় পায়েসের প ওওও বানাতে পরে না😁😁।পারলে হয়ত আমাকে বানাই খাওয়া😍😍😍।কি বলেন সবাই)

আমিঃ ওহহহ খুব ভালো লাগলো।

আন্টিঃ আর একটু এনে দিবো।

আমিঃ আর লাগবে না আন্টি। 

আন্টিঃ আচ্ছা ঠিক আছে।

আমিঃ আমি এখন তাহলে আসি আন্টি। 

আন্টিঃ আচ্ছা আয় তাহলে।

  

বলেই আমি আমার ফ্লাটে এসে রাইস কুকারে ভাত উঠিয়ে দিলাম। আন্টি অনেক করে বলেছেন তার সাথে যেন আমি খাওয়া দাওয়া করি।কিন্তু আমি না করে দিয়েছি। কেমন জানি লাগে অন্যের বাসায় খেতে।


আর ব্যচেল্যারদের একটা সুবিধাহলো তা আলু ভর্তা আর ডিম বেশি খায়। একটাতে প্রটিন আর একটাতে শক্তি। কি অদ্ভুত একটা জিনিস তাই না।

ভাত আর ডিম ভাজি দিয়ে পেট পুরে ভাত খেলায়।আসলে নিজের হাতে রান্না করে খেলে মরিচ ভর্তা দিয়েও পেট পুরে খাওয়া যায়। যদি রান্না খারাপও হয় তাও নিজের কষ্ট করা রান্না করার কথা চিনৃতা করতে করতে খেতে খেতে পেট পুরেই যা হাহাহাহাহ।

রাতে আর ছাদে গেলাম না।ছাদে না যাওয়ার কারন হয়তো আপনারা ভালোভাবেই বুঝতে পারছেন।বুঝিনা এই চাদনির সাথে আমার বনে না কেন। 

বেলকুনি তে বসে বসে গিটার টা নিয়ে বাজাতে লাগলাম।ব্যচেল্যার জীবনের আমার মতে সঙ্গি হয় মাএ দুইটা জিনিস। একটা হলো সিগারেট আর অপর টা হলো গিটার। এই দুইটার মধ্যে যাদের যেটা ভালো লাগে সে সেইটাই সঙ্গি করে নেয়।কেউ কেউ দুটোকেই সঙ্গি করে নেয়।

  

চলবে------------

banner push topper

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

buttons=(Accept !) days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn More
Accept !